নামাজে ফিরে আসার পর আল্লাহ যেভাবে আমার জন্য দরজা খুলে দিলেন — এক বাস্তব অভিজ্ঞতা

আমরা অনেক সময় জীবনের দৌড়ে আল্লাহকে ভুলে যাই, কিন্তু আল্লাহ কখনও তাঁর বান্দাকে ভুলে যান না। এই গল্পটা আমার নিজের জীবনের — যেখানে নামাজে ফিরে আসার পর আল্লাহ এমন এক দরজা খুলে দিলেন, যা আমি কখনও কল্পনাও করতে পারিনি।

নামাজে অনিয়মের এক বছর:

প্রায় এক বছর আমি নামাজে নিয়মিত ছিলাম না। কখনো ফজরের নামাজ পড়তাম, আবার অনেক দিন বাদ পড়ত। জীবনে তখন অনেক অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা, আর মনে এক ধরনের শূন্যতা ছিল। বুঝতে পারছিলাম কিছু একটা ভুল করছি, কিন্তু ঠিক কোথায়, সেটা বুঝে উঠতে পারছিলাম না।

চাকরি হারানোর ধাক্কা:

জুন ২০২৫-এ হঠাৎ চাকরি ছেড়ে দিলাম, সামান্য কারণে। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো এটা একটা দুর্ভাগ্য, কিন্তু পরে বুঝলাম — এটা আসলে আল্লাহর একটি বার্তা। তিনি আমাকে ফিরিয়ে নিতে চাচ্ছেন, যেন আমি আবার নামাজে ও দোয়ায় মনোযোগ দিই।

আল্লাহর দিকে ফিরে আসা (শুরু জুলাই ২০২৫):

১৩ জুলাই ২০২৫ থেকে আমি তহাজ্জুদ নামাজ পড়া শুরু করি। রাতের শেষ অংশে সেজদায় পড়ে মন থেকে কেঁদে আল্লাহর কাছে বলেছিলাম —

“হে আল্লাহ, আমি অনেক ভুল করেছি, কিন্তু এখন আমি সত্যিই তোমার সাহায্য চাই। তুমি আমাকে এমন একটি রাস্তা দেখাও যা আমার জন্য ভালো।”

সেই রাতগুলো ছিল অনেক শান্তি ও কান্নায় ভরা। প্রতিদিন একটু একটু করে মনে হচ্ছিল, আমি আল্লাহর কাছে ফিরছি।

আল্লাহর রহমতের শুরু (৩০ জুলাই ২০২৫):

অবিশ্বাস্যভাবে, মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর — ৩০ জুলাই ২০২৫, আমার ছোট ভাই হঠাৎ ফোন করে বলল,

“ভাই, একটা Buying House-এ চাকরির সুযোগ আছে, তুমি আগ্রহী?”

আমি অবাক হয়ে গেলাম! আমি তো কখনও ভাবিনি এই জায়গায় আমার সুযোগ হতে পারে। এমনকি যিনি রেফার করেছিলেন, তাঁর সঙ্গেও বহুদিন কোনো যোগাযোগ ছিল না।

ইন্টারভিউ ও নতুন যাত্রা:

এরপর আল্লাহর রহমতে ৪ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক এল।
সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছাতেই এত সুন্দরভাবে হলো যে আমি ১১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে নতুন অফিসে যোগ দিলাম — Buying House-এ চাকরি নিশ্চিত হয়ে গেল!
সুবহানাল্লাহ! এটা আমার জন্য একদম অপ্রত্যাশিত ছিল।

যে শিক্ষা পেলাম:

এই ঘটনাগুলোর পর আমি গভীরভাবে বুঝেছি —
👉 আল্লাহ আমাদের দোয়া শুনেন,
👉 তিনি দেরি করেন না, বরং সঠিক সময়ে দেন,
👉 এবং যখন আমরা আন্তরিকভাবে তাঁর দিকে ফিরে যাই, তখন তিনি এমন দরজা খুলে দেন, যা আমরা কখনও ভাবতেও পারি না।

নামাজ শুধু একটি ফরজ ইবাদত নয় — এটি আল্লাহর সাথে সরাসরি সংযোগ।
যখন সেই সংযোগ পুনরায় তৈরি হয়, তখন জীবনের প্রতিটি বন্ধ দরজা খুলে যায়।

উপসংহার:

আজ আমি প্রতিদিন নামাজ পড়ার চেষ্টা করি, এবং প্রতিটি সেজদায় আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।
কারণ আমি জানি —

“যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।” — (সূরা আত-তালাক ৬৫:৩)

এই গল্পটি আমার জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা, এবং আমি আল্লাহর অশেষ রহমতের জন্য আজীবন কৃতজ্ঞ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *